বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে এক মাদরাসাছাত্রকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্মমভাবে নির্যাতন করার অভিযোগে স্থানীয় একটি মাদরাসার বড় হুজুরকে (শিক্ষক) আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে সোমবার রাতে শিশুটির মা তার সন্তানকে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে অত্যাচার করার অভিযোগ এনে চৌহালী থানায় মামলা দায়ের করে।
চৌহালী উপজেলার কুরকি মধ্য পাড়া গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী বন্যা খাতুন অভিযোগ করে জানান, তার আট বছরের শিশু সন্তান মিরাজুল ইসলাম কুরকি মদিনাতুল উলুম নূরানিয়া হাফিজিয়া ও মহিলা মাদরাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিন তার ছেলে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি থেকে মাদরাসায় যায় এবং ৫টায় ফিরে আসে। কিন্তু সোমবার বিকেলে তার ছেলে মিরাজুল ইসলাম বাড়ি ফিরে না আসায় তিনি বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে মাদরাসায় গিয়ে জানতে পারেন তার ছেলেকে একটি ক্লাস রুমের মধ্যে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে একটি খুঁটির সাথে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
তিনি খোঁজ নিয়ে আরো জানতে পারেন, মাদরাসার বড় হুজুর মাওলানা মোহাম্মদ ইয়াসিন হাবিব তার ছেলেকে পায়ে শিকল পরিয়ে এভাবে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন।
এ সময় তিনি মাদরাসায় বড় হুজুরের খোঁজ করলেও তাকে খুঁজে পাননি। তাকে জানানো হয় বড় হুজুর ইয়াসিন হাবিব চাবি নিয়ে বাইরে চলে গেছেন। এ সময় বন্যা খাতুন বাধ্য হয়ে খুঁটি থেকে শিকল খুলে তালা এবং শিকল বন্দি অবস্থায় তার ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসেন। এরপর তিনি লোক ডেকে তার সন্তানের শিকল এবং তালা খুলে ফেলেন।
বন্যা খাতুন জানান, এ ঘটনার পর থেকেই তার শিশু সন্তান মানুষ দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। রাতে তার স্বামী মনিরুল ইসলাম বাড়ি ফিরলে তিনি ঘটনাটি তাকে জানান। এরপর রাতেই তারা চৌহালী থানা এসে মাদরাসার বড় হুজুর মওলানা ইয়াসিন হাবিবকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর মঙ্গলবার সকালে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে। মাদরাসার ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে এই শিশুটিকে এভাবে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করা হয় বলে জানা গেছে।
চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, শিশুটির মা বাদী হয়ে অভিযোগ দায়েরের পর অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষককে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply